Monday, January 28, 2008

গালিবাজি বনাম সুশীলিগিরি (সুশীল-ব্লগারদের দৃষ্টি-আকর্ষণ করছি)

[ভূমিকাঃ এ বিষয়টি নিয়ে লেখাটা সবসময়ই কঠিন, কিন্তু ব্লগে এ নিয়ে বিভিন্ন তর্ক-বিতর্ক প্রতিনিয়তই বেশ জমে উঠতে দেখে আমার ভাবনাটি সকলের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা হলো। এনিয়ে আরেকটি লেখা পাবেন আমার "গালির রককমফের" শীর্ষক পোস্টে ( Click This Link) এবং মিরাজের কিছু পোস্টের কমেন্টে।]

বাংলা সাহিত্যের শক্তিশালী কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস গভীর সমাজমনস্কতা আর তীর্যক ভাষাভঙ্গির মাধ্যমে একটি নিজস্ব রচনারীতি নির্মাণ করেছেন, যে রচনারীতি আমাদের বাংলা ভাষাকে ড্রয়িংরুম থেকে সাধারণ পট্টিতে নামিয়ে অনন্য এক গতি দিয়েছে- দিয়েছে এক নতুন মাত্রা। এর আগে মানিক বন্দোপাধ্যায়, তারাশংকর, সমরেশ বসু প্রমুখেরা একাজে ব্রতী হলেও- ইলিয়াসের আগে আর কেউ আমাদের ঢাকাইয়া কুট্টির জীবনকে এত সার্থক ভাবে সাহিত্যে স্থান দিতে পারেননি- এবং আরবানাইজেশনের অ্যাফেক্টকে সাহিত্যে মুর্তও করতে পারেননি।
তো, আখতারুজ্জামানকে নিয়ে আলোচনা আজকের পোস্টের মূল উদ্দেশ্য নয়- ওনার এক সাক্ষাতকারে একটি মজার কথা পড়েছিলাম। তাঁর লেখাতে অশ্লীলতা বা গালিবাজি- যাকে বলে খিস্তি খেউর করা নিয়ে প্রশ্ন করাতে তিনি বলেছিলেন- "অশ্লীলতা? কাউকে হেয় করা বা বকাঝকা করাই কিন্তু এসব শব্দ ব্যবহারের প্রধান উদ্দেশ্য নয়। এটা যে তাদের স্বভাবের অংশ। যেমন আমার 'ফেরারী' গল্পটার লোকটা চাঁদের আলোয় এক অপূর্ব সুন্দরী পরীর নগ্ন পা দেখেছে, সেটার বর্ণনা দিতে গিয়ে সে বলেছে, 'চান্দে হালায় চুতমারানীর পায়ের মইধ্যে ঢুইকা বারাইবার পারতাছে না'। কিংবা ধরো কোনো একটা মেয়েকে কোনো ছেলের দারুন পছন্দ হয়েছে, তো সে বলবে 'চুতমারানী মাইয়াটারে এমুন পছন্দ হইয়া গেছে হালায় খানকির পুত কি কমু' তো এগুলো সে বলছে গালাগালি দিয়ে মোটেও না। ......... নিজের ছেলেকেও অত্যন্ত মমতার সঙ্গে ডেকে বলবে, 'হালায় গেছিলি কই?' .......।"

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস 'ফেরারী' গল্পটিতে ড্রয়িংরুমের ভাষা ব্যবহার করে বলতে পারতেন- "মাঘের রূপালী জ্যোতস্নায় হে নগ্নিকা- তোমার অপরূপ মোহনীয় পদযুগলের সৌন্দর্য আমার হৃদয় মাঝারে ঝংকার তুলিতেছে"..... বা অন্যকিছু- কিন্তু তাতে কি ঢাকাইয়া কুট্টির মনের ভাব পূর্ণাঙ্গ হতো বা তাদের চিত্রায়ন কি সম্পূর্ণ হতো?

কিছুদিন আগে একটি ডকুমেন্টারি দেখছিলাম- 'কানসাট' আন্দোলন নিয়ে। সেখানে, কানসাটের এলাকাবাসী যখন পল্লীবিদ্যুতকে গালি দেয়, খারাপ ভাষাতেই গালি দেয়- তাতে একবারো মনে হয়নি সে গালি দিয়ে কোন অন্যায় করছে, বরং মনে হয়েছে- এ গালিটুকু এখানে না থাকলে হয়তো ওদের ইমোশনটিই বুঝতে পারতাম না! যাহোক, পরিচালকের সাথে কিঞ্চিত ব্যক্তিগত পরিচয় থাকায় তার সাথে এধরণের ভাষাগুলো ব্যবহার করা নিয়ে কথা হচ্ছিল। জিজ্ঞাসা করেছিলাম- এ ভাষা রাখার উদ্দেশ্য কি? তিনি দুটো কথা বলেছিলেন- প্রথমত- ওদের ইমোশনটিকে ধরা এবং দ্বিতীয়ত আমাদের মিডিল ক্লাসের একধরণের অস্বস্তিবোধ আছে- এ ভাষার মাধ্যমে, সেটাকে কিছুটা আঘাত করা।

অস্বস্তিবোধকারী সেই মিডিল ক্লাস বা সুশীলদের সম্পর্কে কিছু বলার আগে-মিডিল ক্লাসেরই আরেক ধরণের লোকদের সম্পর্কে একটু বলে নেই। যারা গালাগালি নিয়ে নানারূপ যুক্তি করতে গিয়ে বলেন- আমাদের গ্রামবাংলার ভাষা, আমাদের সাধারণ মানুষের ভাষা এসব খারাপ হবে কেন, যৌনতা জীবনের স্বাভাবিক অংশ- এটি নিয়ে কথা বললে অশ্লীল হবে কেন, এমনকি একবার এমন একটি পোস্টও দেখেছিলাম- 'মাগি' শব্দটি আমাদের মা-নানিরা মেয়ের প্রতিশব্দ হিসাবে ব্যবহার করেছেন- তা খারাপ হবে কেন.... ইত্যাদি।

এসব যুক্তির বিপরীতে, আমাদের সুশীলরা হিপোক্রেট, ধান্দাবাজ, ... এসবকে গালি না মনে করলেও ঐ চ-বর্গীয় শব্দসমূহ বা- বাল, মাঙ্গের পুত, চুতমারানী, চুদা-চুদি- খানকি এসব যৌনাঙ্গ, যৌনতা ও যৌনকেন্দ্রিক-জন্মপরিচয় সম্পর্কিত শব্দসমূহ শুনলেই কানে আঙ্গুল দিয়ে বসেন- যেন কানের ভিতর ফুটন্ত পিচ ঢেলে দেয়া হয়েছে!! কিন্তু তারপরেই তাদের শ্রেণীগত অবস্থানটি পরিস্কার করে ফেলেন এসব কথা দিয়ে- 'এসব বস্তিবাসীর কথা'- 'ভদ্র সমাজে এসবের অবস্থান নেই'- 'যারা এসব গালি দেন তাদের বাপমা ঠিকমত শিক্ষা দিতে পারেননি'- 'মুখের ভাষা দিয়েই বোঝা যায়- কার বংশ কেমন' .... ইত্যাদি। সুশীলদের এসব কথার সাথে আমি শতভাগ একমত, কারণ আমাদের দেশে প্রথম থেকেই শিক্ষার সুযোগ ও অধিকার সবার জন্য অবারিত নয়, এবং আমাদের যে শ্রেণীটি এই শিক্ষা-দীক্ষার আওতায় এসেছে- একদম শুরু থেকেই তাদের প্রথম ও প্রধান কাজটিই হচ্ছে- এদেশের মূল স্ট্রিম থেকে নিজেদের আলাদা করা ও নিজেদের আলাদা ভাবা; আর সে আলাদা ভাবনাটা হচ্ছে অবশ্যই নিজেদের উচ্চপদের কেউকেটা গোছের কিছু একটা হিসাবে ভাবা।

যাহোক, যেটি বলছিলাম- গালিগালাজ প্রসঙ্গে। দু'জায়গা থেকে একজন গালি ব্যবহার করতে পারেন বলে মনে হয়। প্রথমত কেউ কেউ যুক্তি-তর্ককে এড়িয়ে যেতে বা নিজের অবস্থানকে পরিস্কার করতে পারবেন না বুঝে বা গলার জোরে বিপরীত মতকে দমিয়ে রাখতে গালি ব্যবহার করেন (কথায় বলে- চোরের মায়ের বড় গলা)। দ্বিতীয়ত- কেউ কেউ রাগের/ ক্ষোভের বহির্প্রকাশ হিসাবে গালি ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে রাগ/ক্ষোভের প্রচণ্ডতা হিসাবে গালির ভাষার তারতম্য ঘটতে পারে। অর্থাত গালির তীব্রতা দিয়েও বোঝা যায়- তার রাগের বা ক্ষোভের পরিমাণ কতখানি। এসব ক্ষেত্রে মনে হয়, গালির ভাষাকে দেখার চেয়ে গালিদাতার ইমোশনটি বা যেটিকে কেন্দ্র করে সে ক্ষিপ্ত সেটিকে কেন্দ্র করে তার বিচার করা উচিত। কেননা, ধরেন- কোন একজনের সহায়-সম্পত্তি সব জবর-দখল করে কেউ তাকে সর্বশান্ত করে দিলে- সেই লোকটি আর যখন কোন আশা দেখে না- তখন যদি সে তার মনের আক্রোশ ঝাড়তে দখলকারীকে 'চুদির বেটা'- (তার শব্দভাণ্ডারের সবচেয়ে খারাপ গালি) বলেও ফেলে- তবে কি আমরা সাথে সাথে কেন এই গালি দিল তার জন্য লোকটির বিচার করতে বসবো? বা যদি গালি দেয় 'কুত্তার বাচ্চা' তবে আমরা কি গালির মানেও বিশ্লেষণ করতে বসবো- কেন বাপকে গালি দিল- ওর বাবাতো কোন দোষ করেনি...... ইত্যাদি??? না-কি, এসব গালির ভিতর দিয়ে তার মনের ক্ষোভটিকেই অনুধাবন করার চেস্টা করবো???? আমার একটি পোস্টে মুহাম্মদ সা. এর স্ত্রী আয়শার নামে কলংক বিষয়ে নিরুদ্দেশ নীহারিকার একটি মন্তব্যে যে পরিমান গালি পড়েছিল (যারা আজ গালিবাজির বিরুদ্ধে বড় বড় কথা বলেন তারাও গালি দিয়েছিলেন!!), তা থেকে কিন্তু আমি শুধু এটাই বুঝতে পারি- মুহাম্মদ সা. সম্পর্কে এনাদের ইমোশন কতখানি।

এবার আসি- গালি দেয়ার প্রথম কারণটি নিয়ে। আমার মনে হয়- এ কারণটিতে যারা গালি-বর্ষণ করে, তারা নির্বোধ প্রকৃতির, এবং তারা গলার জোরেই নিজ মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় বলেই নির্বোধ। এ ধরণের গালিকেই আমি অপছন্দ করি সবচেয়ে বেশি, সেটির ভাষা যেমনই হোক- তা সে চ-বর্গীয় শব্দযোগের গালি হোক আর- অতি ভদ্র গোছের সুশীলিয় গালিই হোক (যেমন, আপনার বাজে কথা, আপনার নোংরা মন, আপনাদের সাথে আর কত প্রশ্ন-উত্তর খেলবো.... ইত্যাদি- এসব যদি যুক্তিহীনভাবে আরোপ করা হয়)।

তবে- যারা নিজেদের গালির পক্ষে যুক্তি করে বলেন- এসব ভাষায় আমাদের দেশ-বাংলার লোকজন কথা বলেন, তাদের সম্পর্কেও মনে হয়- তারা কি আমার দেশের মানুষকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করছেন না? তাদের ক্ষেত্রেতো এ ভাষা শুধু গালি নয়- নর্মাল কথোপকথনের ভাষা, সাধারণ মনের ভাব প্রকাশেরও ভাষা, তারা রেগে গিয়েও যেমন বলে 'খানকি', আবার নিজেদের মধ্যে খোসগল্পের সময়ও হয়তো তার পছন্দের মেয়েটিকেই খানকি বলছে। তখন কিন্তু এই খানকি শব্দটি তার মূল অর্থ হারিয়ে অন্য একটি অর্থ ধারণ করেছে। অমোঘ অনলের এক মন্তব্যে দেখেছিলাম- তিনি বলছেন, ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর আঞ্চলিক ভাষার অভিধানে 'পাছা/গোয়া মারা খাওয়া' মানে ঠকা, প্রবঞ্চিত হওয়া, ধরা খাওয়া ইত্যাদি। এখানেও কিন্তু অর্থের পরিবর্তন ঘটেছে। একই ভাবে তারা যখন রেগে গিয়ে কাউকে 'চুদ'তে চায়- তার মানে এটা নয় যে- তার সেক্স করার ইচ্ছা থেকে সে এটা বলেছে- সে তার রাগের ভাবটি ঐ শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। কিন্তু প্রান্তিকজনের ভাষার দোহাই দিয়ে যারা এসব শব্দ ব্যবহার করেন- কাউকে গালি দেয়ার উদ্দেশ্যে- তখন মনে হয় এর মাধ্যমে আমার প্রান্তিকজনকে খণ্ডিত ভাবে উপস্থাপন করে তাদের অপমান করাই হলো (তারা তো প্রতিনিয়ত আমাদের হাতে অপমানিত হন, লাঞ্ছিত হন- কি সুশীল কি অসুশীল সবার হাতেই)। আর ঐ যে মজার যুক্তি মাগ বা মাগি নাকি আমাদের মা-নানিরা ব্যবহার করতেন!! এ সম্পর্কিত আমার কিছু স্মৃতি আছে। গ্রামে নানি- দাদিদের কাজের মেয়ে টাইপের মানুষদের 'মাগি-ধাগরি' বলার কথা মনে করতে পারি। সে সময়ে জেনেছিলাম- এই মাগ বা মাগি মানে মেয়ে, কিন্তু গালির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত। কিছুটা বড় হয়ে এ শব্দটিকে অন্য অর্থে ব্যবহৃত হতে দেখলাম। 'মাগির দালাল' তো নাটক-সিনেমাতেও ব্যবহৃত হয়- 'মাগি' শব্দটিকে প্রস্টিটিউট অর্থে ব্যবহৃত হতে দেখলাম। যাহোক, মনে হয়েছিল- যে ব্যক্তিটি এ শব্দের পক্ষে পোস্ট দিয়ে বলেছিলেন- এ আমার মা-নানিদের ব্যবহার করা শব্দ, তখন মনে হয়েছিল- মা-নানির ব্যবহার করা শব্দটিই তিনি তার মা-নানি-মেয়েকে বলতে পারবেন কি-না!!!!!

হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের এক কর্মীকে অবশ্য যুক্তি করতে দেখছিলাম- সাহিত্য বাড়িতে মা-বোনের সামনে পড়তে পারলাম কি-না তার দ্বারা নিরুপিত হয় না- কেননা- মা-বোন কিরূপে একটি বিষয়কে গ্রহণ করবে তা সম্পূর্ণই নির্ভর করে ওনাদের মানসিকতা ও আমার সাথে তাদের রিলেশনের উপর। এটিকে মেনে নিয়েও মনে হয়- সাহিত্য করার উদ্দেশ্যে এসব শব্দরাজি প্রাসঙ্গিক মনে হলে আসতেই পারে কিন্তু- আরেকজনকে গালি দেয়ার ক্ষেত্রে এসব শব্দ ইউজ করে তার যুক্তি হিসাবে ওসব বলা নিতান্তই অপরিপক্ক চিন্তার ফসল।

এবারে দেখা যাক, যৌনাঙ্গ- যৌনতা- জন্মপরিচয় কেন্দ্রিক শব্দসমূহ নিয়ে সুশীলদের এই অস্বস্তির কারণ কি? এই গালি বা শব্দ সমূহকে বিশ্লেষণ করলে মনে হয়- এশব্দসমূহ গালি হিসাবে বিবেচিত হওয়ার পেছনে পুরুষতান্ত্রিকতাই দায়ি। কেননা- এসব গালির ভারকেন্দ্র নারী। আরও পরিস্কার করে বললে- নারীর যৌনকেন্দ্রিক অপবিত্রতা (খানকি, চুতমারানী, মাগি, লটি, বেশ্যা, চুদানী, চুতিয়া), এবং অশুদ্ধ জন্ম। এবং অশুদ্ধ জন্ম-কেন্দ্রিক গালি দেখলেও দেখা যায়- অপবিত্র/অসতী(!) মাকে টেনে আনা হয় (খানকির পোলা, চুতমারানীর পোলা, হারামীর বাচ্চা, চুদানীর পোলা)। এসব গালির সাথে আছে যৌনতা কেন্দ্রিক (চুদি, চুদাচুদি, ঠাপাবো, লাগাবো, ...) এবং যৌনাঙ্গ কেন্দ্রিক (বাল, চ্যাট, মাঙ্গ, বিচি, ভোদা...)। কেউ কি ভেবেছেন এসব কেন গালি হবে?? যৌনাঙ্গ তো সবারই থাকে- তাই বলে সেটা কেন গালি হবে- কই হাত, পা, মাথা এসব তো গালি নয়? যৌন-ক্রিয়াও তো মানব জীবনের একটি স্বাভাবিক ক্রিয়া, তাহলে তোমার সাথে সেক্স করবো- এটির বিভিন্ন কথ্য রূপ কেন ভয়াবহ গালি?? মানুষের জন্মের কারণ এই যৌন ক্রিয়া, তার বাবা-মার বৈবাহিক বৈধতা আছে কি-না এবিষয়টি কেন গালির বিষয়বস্তু হতে যাবে?? বা, নারীকেই কেন শুধু অবৈধ সম্পর্ক জনিত গালির লক্ষবিন্দু করা হবে???
আসলে- আদিকালের নারীকেন্দ্রিক তথা মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ভেঙ্গে যখন পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার গোড়াপত্তন ঘটে তখন থেকেই এবং যখন থেকে নারীর উপর পুরুষের পসেসিভনেস প্রতিষ্ঠিত হলো (অর্থাত আমি স্বামি, মানে এই নারী আমার) - সেই তখন থেকেই- পুরুষরা তথা সমাজব্যবস্থা যৌনতা নিয়ে কিছু ভ্যালুজ তৈরি করে নেয়। নারীর শুদ্ধতার(খেয়াল করবেন- নারীর মনোগ্যামি- পুরুষের নয়) উপর অত্যধিক জোরারোপ পুরুষের বংশ বা পুরষের জন্মানুক্রমিক রক্তপ্রবাহের নিশ্চয়তার নিমিত্তেই আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়। এবং ধীরে ধীরে মানুষের স্বাভাবিক যে প্রবৃত্তি সেটাও নেগেটিভলি উপস্থাপিত হতে থাকে। যৌনতাকে কেন্দ্র করে এক ধরণের অজ্ঞানতা, বা লুকোচুরি- এবং অপরাধবোধ এসব জেনারেট করতে শুরু করে এই সমাজ। এবং এভাবে এসবই একসময় মানুষের মাঝে নানারকম ট্যাবু বা সংস্কার হিসাবে বাসা বাঁধে। আর এসব গালিরও উতপত্তি এসব ট্যাবু বা তথাকথিত ভ্যালুজকে কেন্দ্র করে।

তাইতো- আমাদের মিডিল ক্লাস বা সুশীলরা এসব শব্দ শুনলে আঁতকে উঠেন- অস্বস্তি বোধ করেন- আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে শংকা বোধ করেন।
এখন এটা ঠিক যে, এসমস্ত গালি- নারীর উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্বকে ইণ্ডিকেট করে, এ সমস্ত গালি নারীর জন্য প্রচণ্ড অপমানকর, তাই এসব থেকে মুক্ত হওয়াটাও জরুরী- কিন্তু এ গালিকে কেন্দ্র করে সুশীলদের তথা সমাজের যে অস্বস্তিবোধ বা ট্যাবু - তাকে একইরকম অবস্থায় রেখে কোনদিন এসমস্ত গালি থেকে সমাজকে মুক্ত করাও যাবেনা। অর্থাত- যৌনতা ও নারীর পবিত্রতা বা সতীত্ব কেন্দ্রিক সমাজে যেসব ট্যাবু, সংস্কার বা তথাকথিত মূল্যবোধের ধারণা বিরাজ করে সেগুলোকে অক্ষত রেখে কোনদিনও এ সব গালিকে আমাদের সমাজ জীবন থেকে দূরে রাখা যাবে না। এবং সবচেয়ে বড় কথা এ সমস্ত গালি নির্মূল করার চেয়ে ঐসব ট্যাবু-সংস্কার দূর করা অনেকগুন বেশী জরুর।
(কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ মাথামোটা ও মাদারি- মাথামোটার "যৌনতা নাকি গালাগালি, আমরা কাকে অশ্লীল বলব? (লোকে বলে নিধিরাম অশ্লীল)" শীর্ষক পোস্টে তাদের তর্ক-বিতর্ক, অমোঘ অনল এবং মিরাজ, মৃদুল মাহবুব সহ সুশীল ব্লগারবৃন্দ)
এই লেখার লিংক টি আপনার বন্ধুকে পাঠান বন্ধ করুন
--------------------------------------------------------------------------------

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:৩৮ এম.এ.হামিদ বলেছেন: এ সব বলে গালিবাজদের বিরুদ্ধে এ সংগ্রাম আটকাতে পারবেন না
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:৫০ নরাধম বলেছেন: অসম্ভব সুন্দর বিশ্লেষন। প্লাসাইলাম।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:৫৫ বিবর্তনবাদী বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ করবার ক্ষমতা অসাধারণ। প্রিয়তে নিয়ে গেলাম। আপনার সাথে যোগাযোগ হলে ভাল লাগত। ধন্যবাদ। আমার মেইল আইডি।

nisshongo_dhakabashi@yahoo.com
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:১৬
লেখক বলেছেন:
আমার সাথে যোগাযোগ মানে??

যাহোক, একটি মেইল করবো আপনাকে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:৪৭
লেখক বলেছেন:
মেইল পেয়েছেন???

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:৫৯ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
রাজাকারদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অমি ভাই অগ্রণী সৈনিক। এমনকি আনব্যানের দাবিতেও ওনার কলমবিরতিতে আমরা সবাই সাড়া দিয়ে দাবি আদায় করেছিলাম।

সেই অগ্রণী যোদ্ধাকে এখান থেকে ব্যান করা হলো- এমনকি তার মন্তব্য করার অধিকারও কেড়ে নেয়া হলো- আর আমরা চুপচাপ বসে থাকবো- ব্লগিং করে যাবো????

কোনমতেই আমি এটা মেনে নিতে পারছি না।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৩:১৬ ভাইটামিন বদি বলেছেন: লম্বা বিসলেসন....বালা অইচে......মাগার মেলা গালি ভি হিকলাম।।।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৩:২৫ েবহাগ বলেছেন:
দারুন।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৩:৩৮ শান্তির দেবদূত বলেছেন: Showcase - এ নিয়ে গেলাম................. দারুন পোস্ট
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৪:৪৩ এস্কিমো বলেছেন: অসাধারন।

অনেক কথা মনে করিয়ে দিলেন।

আপনার কাছে দাবী - আপনার আলোচনাটা বিশ্বসাহিত্যের দিকে প্রসারিত করুন।

সমরেশ বসুর "প্রজাপতি" - যা মামলায় জিতে এসেছে - কিন্তু অশ্লীলতার জন্যে নিষিদ্ধ ছিলো দীর্ঘ সময়।

কিংবা ল্যাডি চাটার্লিস লাভার - যা এখন ক্লাসিক সাহিত্য হিসাবে বিবেচিত হয় - তাও এক সময় নিষিদ্ধ ছিলো।

সমস্যা গালি না - সমস্যা হলো মুখোশ।

আমার এক বন্ধু বলতো - দেখ এই লোকগুলো - যারা সুটেট বুটেট হয়ে ভদ্রলোকের মতো হাটছে - একসময় এরাও নগ্ন হয় প্রকৃতির আদিম খেলায় - আর এই ৬০০ কোটি মানুষের জন্ম যে প্রক্রিয়ায় তাও কিন্তু অশ্লীল হিসাবে বিবেচিত। সেইটা কি হিপোক্রেসী?

বাংলাদেশে তো আগে শরীরবিদ্যা পড়াতো না অশ্লীল বিবেচনায়...এখন কি পড়ানো হয়?
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:১০
লেখক বলেছেন:
এস্কিমো,
বিশ্বসাহিত্যকে রিলেট করে লেখার মত ক্ষমতা হয়তো আমার নেই। এ কাজ আপনার মাধ্যমেই সম্ভব হতে পারে- কেননা, বিভিন্ন সময় মনে হয়েছে- আপনার বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে ভালো পড়াশুনা আছে, এবং আপনার বিশ্লেষণী ক্ষমতাও দারুন।

এ পোস্ট লিখেছি শুধু- মিরাজ ও অমি রহমানের পিয়ালের কথপোকথনকে কেন্দ্র করে। আমি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না- অমির ব্যান এবং কমেন্ট করার অধিকার কেড়ে নেয়াকে। এবং অমির এই ব্যানকে কেন্দ্র করে আমাদের নিশ্চুপ থাকাটাও আমি মেনে নিতে পারছি না।

অথচ, সহযোদ্ধাদের আনব্যানের আন্দোলনে উনিই আমাদের লিড দিয়েছিলেন- ওনার কথা শুনেই আমরা কলম বিরতিতে গিয়েছিলাম। আজ কি আমাদের কিছু করার নেই???

আর, মিরাজদের অবস্থানকে কোনভাবেই গ্রহণ করতে পারছি না। যে একজন পিয়ালকে গালি দিতে প্রভোক করলো- তাকে এবং গালিদাতাকে একই পাল্লায় বিচার করা- একই সাথে উভয়ের বিরুদ্ধে বলা কোন নীতি এটা আমার মাথাতেই আসে না!!!!!

এই লোকই- কালোবিড়ালকে রেসিস্ট বলে চিতকার চেচামেচি শুরু করেছিল- আরে, আরিল যে বারবার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যাচ্ছে- সেই রাগে কেউ যদি আরিলকে গালি দেয়ই- তবে কি সে গালির ভাষা বিশ্লেষণ করতে বসবো?????

আরো চিন্তার বিষয়- এনাদের মত লোকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ধারী শিক্ষক!!!!!!!!!!!!!

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৫:২১ বিবর্ণ বলেছেন: সাবাস.....ভাই'গো সাবাস......
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ ভোর ৫:২৫ রুদ্র আনোয়ার বলেছেন: অসাধারন আপনার বিশ্লেষন ক্ষমতা ।
পর পর বেশ ক বার পড়লাম । মানবিক অভিব্যক্তি প্রকাশের নানা মাধ্যমে রুক্ষ ভাষার প্রয়োগ আজকাল যে আমলে না নেবার মতো কথ্যরীতিতে পরিনত হয়ে গেছে তা এই বিশ্লেষনটি দ্বারা পরিষ্কার ফুটিয়ে তুলেছেন ।

আসলেই সমস্যা গালি না - সমস্যা হলো মুখোশ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:৫৭ অেমাঘ অনল বলেছেন:
যাহাদের উদ্দেশ্যে লিখিয়াছেন- তাহাদের মন্তব্য আশা করিতেছি।

দুইজনকে মাইনাস দিতে দেখা গিয়াছে।
তাহারা শুধু রেটিং না করিয়া তাহাদের মতামত জানাইলে অধিকতর ভালো করিতেন।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:২২ রিকো বলেছেন: প্রিয়তে যুক্ত করলাম।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:২৫ হলদে ডানা বলেছেন: মাননীয় সভাপতি, আমার অবস্থান বিপক্ষে। শুরুতেই মাইনাস দিয়ে নিচ্ছি। এটি আমার দায়িত্ব। কতৃপক্ষ এত কষ্ট করে মাইনাস দেয়ার ব্যাবস্থা রেখেছেন এজন্য যে যাদের ভালো লাগেনি তারা যেন প্রতীকিভাবে জানান দেয়। অবশ্য আলোচনার সুযোগ দেয়ার জন্য আমার একটা প্লাসও দেয়া উচিত। আপাতত সে সুযোগ নেই।

কথা চলছিল গালাগালি বিষয়ে। শুরুতে কয়েকটা উদাহরণ দেই। মানুষের যৌনাঙ্গ শরীরের অবিচ্ছেদ্য অংগ এবং যৌন ক্রিয়া তার স্বাভাবিক ক্রিয়া। মানলাম, সবাই মানবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন কেউ কি তার যৌনাঙ্গ সকলের সামনে উম্মেচিত করে চলে। আমার দেশে তো কল্পনাতীত, উম্মত্ততার দেশ আমেরিকাতেও কি কেউ সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে রাস্তায় চলে? অবশ্যই না। কেউ কি প্রকাশ্যে যৌন ক্রিয়া করে? অবশ্যই না। অবিচ্ছেদ্য অংগ ও স্বাভাবিক ক্রিয়ার যুক্তি দেখিয়ে আপনার কি সাহস হবে সম্পূর্ন নগ্ন হয়ে চলার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে? তাহলে কি পাবনা ছাড়া আর কোথাও জায়গা হবে? মনে হয় না।

তাহলে কি সেই কারন যে কারণে মানুষ স্বাভাবিক বিষয় হওয়া সত্তেও প্রকাশ্যে উম্মোচন করেনা, প্রকাশ্যে সে ক্রিয়া করেনা? কারনটা এ পৃথিবী যিনি সৃষ্টি করেছেন, পৃথিবীতে মানুষ যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনিই সবচেয়ে ভাল বলতে পারবেন, এবং বলেছেন। সুরা আল আরাফের দ্বিতীয় রুকুতে আপনি পাবেন, 'হযরত আদম ও হাওয়া আ, আল্লাহতায়ালার আদেশ লংঘনের কারণে তাদের দেহ থেকে জান্নাতি পোশাক খুলে যাবার পর দ্রুত জান্নাতের গাছের পাতা দিয়ে নিজেদের লজ্জস্থান ঢাকতে লাগলেন।' কেন? আসলে আল্লাহ তায়ালা মানুষের মানব প্রকৃতির মধ্যেই লজ্জাস্থান বিষয়ে লজ্জা দিয়ে রেখেছেন। সৃষ্টির শেষ পর্যন্ত তাই মানুষ সবসময়ই এ লজ্জা অনুভব করবে।

যৌনাঙ্গ বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রেও একই কথা। সেখানেও আল্লাহতায়ালা মানুষের অন্তরে লজ্জা খোদাই করে দিয়েছেন। আর শয়তান পৃথিবীর প্রথম মানুষ থেকেই তাদের এ লজ্জা বোধ দূর করার 'দায়িত্ব' নিয়েছে। এটি পাবেন একই সূরার তৃতীয় রুকুতে। এখন শয়তানের যে যতখানি আনুগত্য করে, সে ততখানি নির্লজ্জ হবে এটাই স্বাভাবিক।

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে নির্লজ্জ হবার বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারী দিয়েছেন। একদিকে মানব প্রকৃতির মধ্যে নিহিত চিরন্তন লজ্জা বোধ, অন্যদিকে আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা এই দুইয়ের সংমিশ্রণেই মানুষ যৌনাঙ্গ বিষয়ে খামোখা কথা বলাকে অশ্লীলতা বিবেচনা করে। যার মনে আল্লাহর ভয় নেই সে অন্তত সংকোচ বোধের কারণে একে অশ্লীলতা বিবেচনা করে। সেই সংকোচটুকুও দূর করে মানুষের মনুষ্যত্ব চুড়ান্তভাবে বিকিয়ে দেবার চেষ্টা করবেননা দয়া করে।

ধন্যবাদ মাননীয় সভাপতি, ধন্যবাদ বিচারক মন্ডলি, ধন্যবাদ সবাইকে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:৩৪ সামী মিয়াদাদ বলেছেন: নির্বাক মুগ্ধতা....অত:পর প্রিয়তে
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:৩৬ ফেলুদা বলেছেন: সেটাই অতি সুন্দরীও কমোডে প্রাকৃতিক কর্ম সারে, তখন সেই নগ্নতা কতই অশ্লীল। সম্পূরক প্রশ্ন : চতুর কি বায়ুত্যাগ করে?
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১২:৫৩ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
হলদে ডানা,

আপনার আলোচনার জন্য ধন্যবাদ।

আপনি ধরেই রেখেছেন- লজ্জা স্থান ঢাকার রীতি মানুষের আদিকালের। এটি সঠিক নয়।

আপনার আজ যে লজ্জা বা লজ্জা কেন্দ্রিক ধারণা তৈরি হয়েছে- তা সোসাইটি ড্রাইভেন। একদম শুরুতে মানুষ দীর্ঘদিন কোন পোষাক ব্যবহার করেনি বলেই জানা যায়- বিভিন্ন গুহা চিত্র থেকে। এরপর- ধীরে ধীরে যেসব পোষাক দেখা যায়- তা পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই কোমরের নিচ থেকে নিম্নাঙ্গ ঢাকার রীতি দেখা যায়। তখন কি নারী ও পুরুষ কোমরের নিচের অংশ ঢেকে রেখে যে বাকি অংশ অনাবৃত রাখতো- তাতে কি তারা আজকের মত লজ্জা বোধ করতো??

আজও অনেক ট্রাইবে দেখবেন- মেয়েদের উর্ধাঙ্গ অনাবৃত। সেসব ট্রাইবে জন্মগ্রহণকারী কেউ কি আপনার-আমার মত লজ্জা বোধ করে??? আপনার জন্ম সেখানে হলে কি আপনার লজ্জা কেন্দ্রিক বোধ একই রকম থাকতো????


আমি বলছি না- তাই বলে এখন সকলকে উলঙ্গ হয়ে ঘুরতে হবে। কারন এই সংস্কৃতি অর্জন মানুষের দীর্ঘ দিনের সংগ্রামের ইতিহাসের ফসল। লজ্জা কেন্দ্রিক বোধও মানুষের অর্জন। সেটিকেও তুলে দয়ার কথা বলছি না। আমি যেটা বলছি- সেটা হলো- এসব যখন মানুষের মধ্যে সংস্কার হিসাবে দানা বাঁধে- তখনই বিপদ। আজ জনসম্মুখে উলঙ্গ হওয়া যেমন ঠিক না তেমনি প্রয়োজনে- যেমন ডাক্তারি অপারেশনে- বা ডাক্তারি চেকআপে- উলঙ্গ হওয়াটাই সর্বাধিক প্রয়োজন- সেক্ষেত্রে ঐ লজ্জাটা যদি সংস্কারের মত বদ্ধমূল হয়- তবে সমূহ বিপদ।


আর যৌনতাকে ওপেন করার কথা কি বলা হয়েছে একবারো??
পৃথিবীতে কুকুর- বিড়ালের মত এই কর্মটি এত ওপেনলি খুব কম প্রাণীই করে। বিভিন্ন পাখি- হরিণ-বাঘ- এরাও যৌনক্রিয়ার জন্য আড়াল খোঁজে। এতে মানুষের কোন বিশেষত্ব নেই। বিশেষত্ব হলো- যৌনতাকে মানুষ ভালোবাসার স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে- এটাই মানুষের বড় অর্জন। এই ভালোবাসা সম্ভবই নয় দুজন মানুষকে সমান অধিকার ও সমান মর্যাদায় দেখতে না পারলে। তাই বর্তমান সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা - এই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১:১১ হলদে ডানা বলেছেন: আপনি যদি নিক নেমে না হয়ে সত্যিকারের নাস্তিক হয়ে থাকেন তাহলে আলোচনার ধরন পরিবর্তন করতে হবে আমাকে। ধারণা করছি সম্ভবত না।

দেখুন মানুষ শুরুতে উলঙ্গ ছিল এটি সম্পূর্ণ অনুমান নির্ভর। এর সাথে সত্যিকারের ইতিহাসের কোন সম্পর্ক নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে প্রামাণ্য ইতিহাস পাওয়া যাবে আল কুরআনে। মানুষের সৃষ্টি পোষাক সম্পর্কিত বিষয়ে তার কি অবস্থান ছিল তা আল্লাহতায়ালা কুরআনে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন। সুরা আল আরাফের ২য় ও ৩য় রুকুতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সৃষ্টির শুরুর মানুষটি ছিলেন সভ্য। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে দিকভ্রান্ত করে পাঠাননি। স্পষ্ট পথনির্দেষণা দিয়েই পাঠিয়েছেন।

সময় গড়িয়ে যায়। মানুষ আল্লাহর নির্দেশনা, নবীদের পথপ্রদর্শণ ভুলে যায়। শয়তানের কুমন্ত্রণায় পড়ে পোষাকের ব্যাপারে গাফেল হয়। তেমনই কোন জাতি উলঙ্গ সভ্যতা ধারণ করে। তাতো আজো করছে। হাজারো বছর পরেও আজও পশ্চিমা সভ্যতার টুকরো কাপড় পরিধান প্রমান করে আল্লাহর নির্দেশ ভুলে মানুষ অসভ্যতার কত নিম্নে পৌছতে পারে তা সহজেই বোঝা যায়। বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের কোন মানুষ পশ্চিমাদের ড্রেস দেখলে হয়তো আপনার মতই ধারনা করবে যে ওরা সভ্যতার কোন আলো পায়নি।

আবারও বলছি, পোশাক মানুষের গবেষনালব্ধ কোন অর্জন নয়। সৃষ্টির শুরু থেকে আল্লাহ মানুষকে পোশাকের জ্ঞান দিয়ে পাঠিয়েছেন।


২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১:২৩ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
হলদে ডানা,

আপনার জন্ম পরবর্তি সময় থেকে শুনতে শুনতে যে বিশ্বাস আপনার মধ্যে বাসা বেঁধেছে- সেটি আপনাকে প্রায় জ্ঞানান্ধ বানিয়েছে। ফলে- সাধারণ যুক্তি- সাধারণ চিন্তা এসব আপনার মস্তিস্কে স্থান পায় না। আপনি ইসলাম- কোরআন- হাদীসের বাইরে তাই চিন্তাও করতে পারেন না।


এই আপনার জন্ম অন্য ধর্মের পরিবারে হলে- আপনিই হয়তো জোর গলায় যুক্তি করতেন- ভগবান কি করেছেন- কৃষ্ণ কি করেছেন- রাম কি করেছেন- বেদ-উপনিষদে কি লেখা আছে- অথবা অন্য কোন একটি বিশ্বাস আপনি আকড়ে ধরতেন।


ধর্ম বিশ্বাস লোকজনকে এমনই অন্ধ বানায় যে, তারা বুঝতেও পারে না- মানুষ একটি পরিমণ্ডলের সংস্পর্শেই আসলেই কেবল সে সম্পর্কে অভিহিত হতে পারে। ......... যাহোক বিশেষ কি বলবো!!


আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন- এ ছাড়া আর কি-ই বা বলার আছে!!!!
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:০৭ হলদে ডানা বলেছেন: বোঝা যাচ্ছে আপনি প্রকৃতই কুরআনে বিশ্বাসি নন। ধন্যবাদ।
এবার দেখি কিভাবে আলোচনা করা যায়। অনেকগুলো পয়েন্ট মাথায় আসছে, বুঝতে পারছিনা কোন দিক থেকে শুরু করলে ভাল হয়।


পৃথিবীর শুরুর ইতিহাস আমরা কিভাবে জানবো? মানব সৃষ্টির ইতিহাস জানতে আমরা কোন উৎসের উপর নির্ভর করবো? সৃষ্টির শুরুর মানুষটি উলংগ ছিল, পরে ধীরে ধীরে নিজের পথ অনুসন্ধান করে করে গবেষণা করে করে পথ চিনতে পেরেছে, সভ্যতা চিনতে পেরেছে এইতো আপনি বলতে চাচ্ছেন? আচ্ছা আপনি এ ইতিহাস কোথায় পেয়েছেন? ছোট সময় থেকে সমাজ বই পড়ে, আপনার আশেপাশের আলাপচারিতা শুনেই তো আপনি এ সিদ্ধান্তে পৌছেছেন। আপনার কাছে কোন প্রামান্য দালিল কি আছে? গুহার দেয়ালে উলঙ্গ মানুষের চিত্র যে প্রথম মানুষের এ সিদ্ধান্তে পৌছার মত যথেষ্ট প্রমাণ কি মানুষের হাতে আছে?

বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার পূরাকীর্তিগুলোর দিকে তাকান, সব নগ্ন নারী মূর্তি। আপনি কি বলবেন তাদের আগে মানুষ পোষাক পরা জানতোনা? সম্ভবত তা বলবেননা। আপনার উপরের উদাহরণের বিষয়টাও তেমনই অনুমান নির্ভর।

ধরুন আপনার কাছেও সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নেই, আমার কাছেও নেই। অর্থাৎ আপনিও লিটারেচার নির্ভর, আমিও। এবার আসুন কার লিটারেচার কতটা অথেন্টিক তার বিশ্লেষণ করি। আমার ইতিহাসের সূত্র যে গ্রন্থ তার প্রারম্ভ আজ থেকে চৌদ্দশত বছর আগে। আজ পর্যন্ত তার একটি নোকতা পর্যন্ত পরিবর্তন হয়নি। আমার সূত্রের গ্রন্থকার বলেছেন এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই। চ্যালেঞ্জ এটি আসমানী কিতাব। আপনার ঐতিহাসিক গ্রন্থের লেখক বলেছেন এই বইয়ের কোন ভুল দেখলে পাঠকদের কাছে সবিনয় অনুরোধ ভুল ধরিয়ে দেবেন, পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধন করা হবে।

যুক্তি কোন গ্রন্থটিকে সত্যের কাছাকাছি দাবী করে?

আর কুরআন যে অবিকৃত তা বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সবার দ্বারা স্বীকৃত।


আরেকটা বিষয়। স্রষ্টা গ্রহ নক্ষত্র সৌরজগত আকাশ পাতালের প্রত্যেকটি সৃষ্টির একটি অমোঘ নিয়ম বেধে দিয়েছেন। সেই স্রষ্ঠা মানুষকে কি কোন পথনির্দেশনা না দিয়েই অন্ধের মত হাতড়ানোর জন্য ছেড়ে দিয়েছেন? যুক্তিতে বলেনা। সভ্যতা রুচিবোধ এগুলো মানুষের প্রতি পায়ে পায়ে প্রয়োজন হয়। তাই এগুলো আল্লাহতায়ালা শুরুতেই দিক নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন। আর বিমানে চড়বে না ঘোড়ায় চড়বে এ বিষয়টি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তনশীল। তাই আল্লাহ এ বিষয়গুলো মানুষের গবেষণার অধিনে ছেড়ে দিয়েছেন।

আপনার দোয়া আল্লাহ কবুল করুন। আমি প্রতিদিন অন্তত ৫০ বার আল্লাহর কাছে আমার মঙ্গল ও সঠিক পথ চেয়ে আবেদন করি।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:৩৪ এখন ক্ষনিকের অতিথী বলেছেন:

হলদে ডানা = নাস্তিকের ধর্মকথা = মাদারী
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:৪১
লেখক বলেছেন:
থ্যাংকিউ।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:৪১ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
হলদে ডানা,
আপনি যদি ঐতিহাসিক দলিলকে অস্বীকার করতে চান- কি আর করা!!!
দেখি বর্তমান দিয়েই আপনাকে বোঝানো যেতে পারি কি-না।

আপনি যে বললেন- মানুষ সৃষ্টির আদি থেকে লজ্জাকেন্দ্রিক বোধ নিয়ে আসে- বা প্রথম থেকেই পোশাক-আশাক পরতো- দেখা যাক বর্তমান প্রেক্ষিতে বিচার করি।


আপনি চোখ-কান খোলা রাখলেই দেখতে পারবেন- পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য জাতি-গোষ্ঠীর মানুষের নানারকম ভাষা-কৃষ্টি-কালচার-ভাষা। এই ভাষা-কৃষ্টি-কালচার-রুচি-বোধ এসবের দিকে তাকালে বা পর্যালোচনা করলে দেখবেন- সবকিছুই একটি একজনের জন্মকেন্দ্রিক ভৌগলিক পরিমণ্ডল দিয়ে পরিচালিত। যে মানুষটি বাংলা ভাষী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তার ভাষা কি হিব্রু হওয়া সম্ভব?? পুর্তগীজ ভাষার সম্পর্কে আসার আগে কি কখনও জানা সম্ভব এই ভাষাটি কেমন??? আজ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোন একটি মেয়েকে বা মহিলাকে পাশ্চাত্য কালচারের মত করে জিন্স আর টিশার্ট পরাতে চাইলে সে কি পরবে কোনরূপ লজ্জা পাওয়া ছাড়াই। ইউরোপে বাচ্চাকাল থেকে ছেলেমেয়েরা সবাইকে কিস করতে দেখে দেখে বড় হয়- ফলে একটি কিসের দৃশ্যে তারা যেভাবে নিস্পৃহ থাকে- যে সোসাইটিতে যারা এ দৃশ্য নাদেখে দেখে অভ্যস্ত তাদের মধ্যে কি একইরকম নিস্পৃহতা থাকে???
আরো পরিস্কার করে বললে- যে অঞ্চলে বা যে ট্রাইবে মেয়েরা উর্ধাঙ্গ অনাবৃত করে রাখে- সেখানকার পুরুষদের সাধারণভাবে স্তনকে দেখে যে যৌনাকাঙ্খা তৈরি হয়, সেটা কি যে অঞ্চলে- সম্পূর্ণ আবৃত করে রাখা হয়- সে অঞ্চলে অনাবৃত স্তন দেখে কি একইরকম আকাঙ্খা তৈরি হবে???

আসলে- সব কিছুই নির্ভর করছে- মানুষটির রুচি-সংস্কৃতির উপর, যেটা গড়ে উঠে তার পারিপার্শিকতা থেকে- বা সমাজ ব্যবস্থা থেকে। ফলে- এই লজ্জাও নির্ভর করে যে সামাজিক পরিমণ্ডলে সে জন্মগ্রহণ করে- যেখানে সে বেড়ে ওঠে- তার উপর।

আরেকটু ভেবে দেখবেন- একটি বাচ্চার গড়ে ওঠা- বেড়ে ওঠা ক্লোজলি অবজার্ভ করে দেখতে পারেন। আপনি যদি কোন বাচ্চাকে একদম শুরু থেকে সম্পূর্ণ লোনলি- একা একা বেড়ে ওঠার একটি পরিবেশ দেন- তবে দেখবেন সে কোন ভাষাই তার হবে না- সে যদি জঙ্গলে বড় হয়- তবে বড় জোর কিছু পশুপাখির শব্দ অনুকরণ করা আয়ত্ব করতে পারে- তাকে জন্ম থেকে কোন পোশাকের সন্ধান যদি দেয়া ন হয়- তবে তার লজ্জা নিবারণের জন্য পোশাক আবিস্কার করার সম্ভাবনা খুবই কম- এমনকি একঝাঁক পুরুষ-নারী বাচ্চাকে এরকম একটি পরিবেশে বড় করে তুললে- তাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
তারা যেটা করবে- বেচে থাকার জন্য সংগ্রামে লিপ্ত হবে- যদি বেচে থাকতে পারে- তবে, ধীরে ধীরে বেচে থাকার উপযোগি বিভিন্ন বিষয় আয়ত্বে আনার চেস্টা করবে- ধীরে ধীরে এক দুই বা আরও কিছু বংশ পরে অনেক কিছুই আয়ত্বে আনবে হয়তো। এটাকেই বলে- সমাজ বিকাশের বিজ্ঞান।

আশা করি বুঝতে পারছেন। আপনার কোরআন নিয়ে পরে বলছি।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ২:৪৭ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
হলদে ডানা,

দেখুন কোরআন সম্পর্কে আপনার বিশ্বাস সব ধর্মগ্রন্থ পড়ে না কি জন্মের পর থেকেই এটিকেই সঠিক বলে জেনে এসেছেন- বলে- একেই একমাত্র অভ্রান্ত গ্রন্থ হিসাবে গণ্য করছেন?? আপনার কি মনে হয়- আপনার জন্ম অন্য কোন পরিবারে হলে- সেই পরিবারের ধর্মগ্রন্থকে কি একইরূপ ভাবে অভ্রান্ত মনে করতেন না???

এ বিষয়ে আমার কয়েকটি পোস্ট আছে।
পড়ে দেখতে পারেন। অবশ্য বিশ্বাস দূর্বল হয়ে যাওয়ার ভয় থাকলে- ভিন্ন কথা।

বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর........১, ২, ৩, ৪....

Click This Link

Click This Link
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:১০ মৃদুল মাহবুব বলেছেন: আমার মতামত রইল

আমার ব্লগবাদ বা ব্লগীয় ম্যানিফেস্টো : গালিগালাজের পক্ষ বিপক্ষ এবং ব্লগীয় রাজনীতি
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৩১ সারওয়ারচৌধুরী বলেছেন:

'যারা গালি-বর্ষণ করে, তারা নির্বোধ প্রকৃতির, এবং তারা গলার জোরেই নিজ মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় বলেই নির্বোধ।'-একমত

'কেউ কি ভেবেছেন এসব কেন গালি হবে?? যৌনাঙ্গ তো সবারই থাকে- তাই বলে সেটা কেন গালি হবে- কই হাত, পা, মাথা এসব তো গালি নয়? যৌন-ক্রিয়াও তো মানব জীবনের একটি স্বাভাবিক ক্রিয়া, তাহলে তোমার সাথে সেক্স করবো- এটির বিভিন্ন কথ্য রূপ কেন ভয়াবহ গালি?? '- সোজা উত্তর, ট্যাবু বা সংস্কার বা মুল্যবোধ বা দৃষ্টিভঙ্গি বা রুচিবোধ। আচ্ছা বলতে পারবেন পৃথিবীতে এমন কোন সভ্য মানুষ আছে যে তার বন্ধুকে বা ভাইকে জিগ্যেস করবে স্বাভাবিকভাবে-'কি রে আজ কি তুই আর তোর বউ চু..... করেছিস?' করে না। কেন করে না? জনসমক্ষে এভাবে বলা বিশ্রী।

আর গালিগালাজ প্রসঙ্গে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সাহিত্য কর্ম তুলে ধরা অপ্রাসঙ্গিক। কেননা, তিনি চরিত্র চিত্রায়নে যেটুক তুলে এনেছেন প্রান্তিকজন থেকে সেটার যৌক্তিকতা আছে। কিন্তু এখানে আমরা গালি প্রসঙ্গে বলছি। ইলিয়াস গালি দেন নি বা গালির পক্ষেও বলেন নি।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:২২
লেখক বলেছেন:
কমেন্ট করার আগে পোস্ট ভালো করে পড়ে বুঝে তারপর কমেন্ট করা উচিত। ইলিয়াসের আলোচনা আনার প্রাসঙ্গিকতা সেখানেই- অনেক সুশীল ব্লগার - চ-বর্গীয় শব্দ নিয়েই একধরণের এলার্জিতে ভুগে। শেষের দিকে- তার কারণ উদঘাটন করার চেস্টা করেছি। ইলিয়াসের 'চুতমারানি' শব্দটি তাদের কেমন লাগে সেটাও দেখা দরকার মনে হয়েছিল।


আমার পোস্টের মূল কথা- কিন্তু অহেতুক গালির বিরুদ্ধে সেটা চ-বর্গীয় শব্দ ব্যবহার করেই হোক- আর খুব ভদ্র গোছের শব্দ ব্যবহার করেই হোক।

আবার ক্ষোভের বহিপ্রকাশ হিসাবে যখন গালি ব্যবহার করে- তখনও বিচার টি একইরকম হওয়া উচিত নয়- এসবই বলতে চেয়েছি আমার পোস্টে।

সারসংক্ষেপ বলতে গেলে এভাবে বলা যায় ইলিয়াসের ভাষাতেই- শিল্প/সাহিত্যে চুমুর একটি চিত্রায়ন অশ্লীল হতে পারে যদি তা অপ্রয়োজনীয় হয়- যেকারণে বাংলা সিনেমা অশ্লীল, কেননা সেখানে অহেতুক নায়ক নায়িকাকে জড়িয়ে ধরে। আবার অন্যদিকে সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্সের একটি ডিটেইল এক্সপ্রেসনও শ্লীল হতে পারে- যদি তা প্রয়োজনীয় হয়।


ইলিয়াসের উদাহরণ বারবার আনছি এ কারণে যে- বিষয়টি সম্পূর্ণতায় বুঝতে সহযোগিতা হতে পারে। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন- সেটি শ্লীল/অশ্লীল কি-না তাও নিরূপিত হবে প্রয়োজনিয়তার উপর। আপনার বন্ধুর যৌন-ক্রিয়ার খবরাখবর যদি আপনার জন্য অপ্রয়োজনীয় হয়- তবে তা অবশ্যই অশ্লীল। কিন্তু আপনি যদি একজন গাইনী ডাক্তার হন- বা যৌন চিকিতসক হন- তখন আপনার বন্ধুর কোন সমস্যায় চিকিতসা পরামর্শ দিতে আপনার বন্ধুর যৌনক্রিয়ার বিষয়-আশয় জানা আবশ্যক হলে- না জানতে চাওয়াই অশ্লীল হবে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৪ সারওয়ারচৌধুরী বলেছেন:

আপনার এই আলোচনায় অনেক নারী ব্লগার ইচ্ছা থাকা সত্তেও অংশ নিতে চাইবেন না। কারণটা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:২৪
লেখক বলেছেন:
অনেক নারী ব্লগার এবং অনেক পুরুষ ব্লগার এ পোস্টের আলোচনায় অংশ নিতে চাবে না-

তবে আপনি সেই অনেক নারী/পুরুষের বলয় থেকে এট লিস্ট বের হতে পেরেছেন বিধায় আপনাকে অভিনন্দন।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৫৩ রোকন বলেছেন: ক্যান, এই পোষ্ট পড়লে নারী ব্লগারদের সমস্যা কি? মানুষকে মানুষ ভাবতে শিখুন। @সারওয়ার
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:০৪ সারওয়ারচৌধুরী বলেছেন:


না.ধর্মকথা

'এবং সবচেয়ে বড় কথা এ সমস্ত গালি নির্মূল করার চেয়ে ঐসব ট্যাবু-সংস্কার দূর করা অনেকগুন বেশী জরুর।'-----এই বাক্যে আপনার চেতনায় এক্সট্রিমিজম আছে বুঝা যায়।


প্রতিটি ধমীয় সংস্কারের (বেসিক মুল্যবোধ) ইতিবাচক দিকও আছে। ওগুলো মনে হয় কেয়ামত পর্যন্ত কেউ চেষ্টা করেও দূর করতে পারবে না।
হ্যাঁ বলতে পারেন, কুসংস্কার দূর করে পরিশীলন আনা দরকার।



গালি বিষয়ক আমার পোস্ট পড়ে আপনি কোনো মন্তব্য করলেন না। আমি তো কয়েকটা মন্তব্য করলাম
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:২৫
লেখক বলেছেন:
এক্সট্রিমিজম মানে কি?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:৫০ নাভদ বলেছেন: +, প্রিয় পোস্ট
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:৩২ ফেলুদা বলেছেন: মুরালি ভেটকিটা সুন্দর হইছে
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৩ হমপজদ বলেছেন: ২২ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:০৬

ফেলুদা বলেছেন: হারামজাদা সরি হমপজদ ঠিক বলেছে
_____________________________________

হারামজাদা সরি ফেলুদা কেমন আছ?
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:৫২ ফেলুদা বলেছেন: দেখো হারামজাদা, আমাকে হমপজদ বলবানা। আর প্রশ্নের উত্তর হইলো আমি ভালো আছি।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৪ হমপজদ বলেছেন: ২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৫:৫২

ফেলুদা বলেছেন: দেখো হারামজাদা, আমাকে হমপজদ বলবানা। আর প্রশ্নের উত্তর হইলো আমি ভালো আছি।
________________________________________

তোরারে কি রাজাকার রা কুত্তার বাচ্চা বানাইছে?

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৮ মিরাজ বলেছেন: নাস্তিকের ধর্মকথা,
আলোচনা শুরুর জন্য দুইপক্ষের অবস্থান শুরুতে একই অবস্থানে থাকা উচিত। কিন্তু আপনার ক্ষেত্রে না থাকায় আলোচনায় খুব বেশী উতসাহী নই । আপনি শুরুতেই আমাকে ভন্ড, ধর্মান্ধ, এর মত লোক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক !! এইসব কমেন্ট করে আমার একটি অবস্থান তৈরী করার চেষ্টা করেছেন, সেই বিপরীত স্রোতে সাতার কাটার ইচ্ছা খুব একটা নাই । আর একটি সমস্যা হচ্ছে এই ধরনের আলোচনায় ব্যবহৃত বক্তব্যকে out of context ব্যবহার করার প্রবণতা। এটাও আলোচনাকে নিরুতসাহিত করে।

প্রথমে কিছু ব্যাপার পরিস্কার করে নেয়া প্রয়োজন, কারো ধর্মবিশ্বাস নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই, কে আস্তিক আর কে নাস্তিক তা আমি জানার আগ্রহও বোধ করিনা এবং তা কোন কারনে জানা হলেও তা আমার তার সাথে সম্পর্ক বা আলোচনায় কোন প্রভাব ফেলেনা। ধর্মকে আমি ব্যক্তিগত জীবণাচারণের অংশ মনে করি যেটা মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার । তাই ব্লগে ধর্মীয় আলোচনায় কখনোই উৎসাহ পাইনা ।

ধর্ম যেহেতু বিশ্বাসের অন্তর্গত, এটাই ধর্মের সবচাইতে একাধারে সবচাইতে সবল আবার সবচাইতে দুর্বল দিক। আমি ব্যক্তিগত ভাবে আস্তিক বা নাস্তিক যাই হইনা কেন, ধর্ম বা নাস্তিক্যবাদ যে কোন বিশ্বাসকেই অহেতুক আক্রমণ করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির বিপক্ষে। আর সেজন্যই আমার ধর্মীয় উস্কানি বন্ধে পোষ্ট দেয়া যেটা আপনাকে অনেক ইরিটেট করেছে এবং আমাকে বিবিধ বিশেষণে অভিহিত করেছেন। এই ক্ষেত্রে আপনার সহনশীলতার অভাবও লক্ষণীয় ।

আমি যদি আস্তিক হই সেক্ষেত্রে মুল সমস্যা হলো আপনার সাথে আমার ধর্ম নিয়ে তর্ক কখনোই সঠিক হবেনা কারণ আমি যাকে স্ট্যান্ডার্ড মনে করি আপনি তাকে মানেন না। তাই এইসব অনর্থক আলোচনায় যাবার কোন প্রেরণা আমি পাইনা । এইসব আলোচনার অধিকাংশই কোন পরিণতি ছাড়াই শেষ হয়, মাঝ থেকে ভন্ড ধর্মান্ধ এইসব উপাধি পাওয়া।

এবার আসি গালি প্রসঙ্গে, আপনি ভালো বিশ্লেষণ করেছেন কিন্তু কিছু বাস্তবতাকে এড়িয়ে গেছেন।

সাধারণ দৃষ্টিতে যে সব শব্দ গালি হিসাবে বিবেচিত হয় তার অনেক শব্দই প্রান্তিক জনপদের মানুষের সাধারণ ভাষা। এবং শুধু আখতারুজ্জামান ইলিয়াস নন আরো অনেক সাহিত্যিকের সৃষ্টিতে এই সব শব্দ কথোপকথনে উঠে এসেছে অবলীলায়। কোন অবস্থাতেই সেই সব শব্দ গালি মনে হয়নি কারন শব্দগুলিকে ব্যবহার করা হয়েছে প্রেক্ষিত ঠিক রেখে। এক্ষেত্রে যে শব্দগুলি বলছে এবং যাকে উদ্দেশ্যে করে বলছে তাদের চিন্তা একই তরঙ্গে অনুরণিত হয়। আমরা সেই সব সাহিত্য কর্ম পড়ে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের চিন্তাভাবনার প্রকাশকে জানতে পারি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে সেই একই শব্দ এই ব্লগে কারো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে সেটা গালি হবে কিনা। হবে এবং একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করি কেন হবে। আপনি বিভিন্ন যৌনতা নির্ভর গালির সাথে একটি শব্দ উল্লেখ করেছেন যেটি হলো "মাগী" । এই শব্দটি পুরাতন ঢাকার মানুষ হরহামেশা ব্যবহার করেন, গ্রাম গন্জেও প্রচলিত। এই ক্ষেত্রে তারা যখন কোন মেয়েকে বলেন " মাগীকে আজ সুন্দর লাগছে" তখন যাকে বলা হচ্ছে সেও বুঝতে পারে যে এটা তার জন্য প্রশংসাসুচক একটি কথা, তাই সে কথাটিতে আহত হয়না। কিন্তু সেই একই "মাগী" শব্দটি যদি কোন ব্লগার অপর কোন নারী ব্লগারকে উদ্দেশ্য করে বলেন তাহলে তা নিশ্চিতভাবেই গালি হবে কারণ যিনি বলছেন তিনিও সেই জনগোষ্ঠীর ভাষায় কথা বলেননা (এই ক্ষেত্রে পুরাতন ঢাকার) এবং যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হচ্ছে তিনিওনা । একটি শব্দ কি উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে তাই নির্ধারণ করে শব্দটি গালি হবে নাকি প্রান্তিক জনপদের ভাষার উদাহরণ হবে । তাই প্রান্তিক জনপদের ব্যবহৃত যে কোন শব্দই সু-নির্দিষ্ট প্রেক্ষিত ছাড়া ব্যবহার করা যায় না । এই একই উদাহরণ আপনি "খানকি" সহ অন্যান্য যে সব উদাহরণ দিয়েছেন তার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।

এবার আসা যাক আপনার উল্লেখ করে চ-বর্গীয় বিভিন্ন গালি যেগুলি নারীকে অবমাননার জন্য এবং পুরুষের ধর্ষকামী মানসিকতার প্রকাশ ঘটানোর জন্য ব্যবহার করা হয় । আপনি বিভিন্ন যুক্তির মাধ্যমে বোঝাতে চেষ্টা করেছেন যে এগুলি প্রকৃতপক্ষে তথাকথিত বিভিন্ন সোশ্যাল ভ্যালুজ বা ট্যাবুর জন্য আপত্তিকর লাগে কারণ নারীর যৌনতাকেন্দ্রিক আক্রমণ গালি হিসাবে বিবেচনা করছি কিন্তু হাত পা মাথা অন্যান্য অঙ্গ কেন্দ্রিক কথাকে আপত্তিকর বা গালি হিসাবে বিবেচনা করছিনা।

আসলে এখানে আপনার স্ব-বিরোধিতা এবং বিষয়টিকে সঠিকভাবে উপস্থাপন না করাটা লক্ষণীয়। সমাজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পুরুষ নারীকে নির্যাতনের ক্ষেত্রে যৌনতাকে ব্যবহার করছে এবং সভ্যতার ক্রমবিকাশের হাত ধরে নারীকে এইসব হিংস্রতা থেকে রক্ষার জন্যই বিভিন্ন সামাজিক বা ধর্মীয় ট্যাবুর উদ্ভব হয়েছে । এরপর পুরুষ যখন সরাসরি শারীরিকভাবে নারীকে আক্রমণ করতে পারেনি তখন আশ্রয় নিয়েছে যৌনতাকেন্দ্রিক বিভিন্ন শব্দের যা নারীর জন্য অবমাননাকর, এরপর এইসব শব্দকে সমাজে উন্মুক্ত ব্যবহারের বিরুদ্ধেও ট্যাবু গড়ে উঠেছে। এটা সভ্যতার বিবর্তনের একটা অংশ, একে অস্বীকার করার মানে হলো সেই আদিম ব্যবস্থায় ফিরে যাবা যেখানে কোন ট্যাবু বা রোস্ট্রিকশন আরোপিত ছিলোনা এবং সব কিছুরই স্বাধীনতা ছিলো। আধুনিকতার প্রয়োজন আছে কিন্তু সকল সোশ্যাল ট্যাবুকে অস্বীকার করে আধুনিকতা আনয়ন করা যায়না বরং অনেক ক্ষেত্রে ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে অর্জন করা অনেক কিছুকে অস্বীকার করে পুনরায় সেই অ-সভ্য অবস্থায় যাবার মানসিকতা প্রকাশ পায়।

এ ক্ষেত্রে আরেকটি ব্যাপার খেয়াল করতে হবে, আপনার আলোচনায় মনে হচ্ছে যে কোন সোশ্যাল ট্যাবুই মুক্ত চিন্তার বা মুক্ত কর্মের জন্য ক্ষতিকর এবং সেই জন্য আপনি বলছেন "যৌনতা ও নারীর পবিত্রতা বা সতীত্ব কেন্দ্রিক সমাজে যেসব ট্যাবু, সংস্কার বা তথাকথিত মূল্যবোধের ধারণা বিরাজ করে সেগুলোকে অক্ষত রেখে কোনদিনও এ সব গালিকে আমাদের সমাজ জীবন থেকে দূরে রাখা যাবে না। "

আসলে এখানেই মুল সমস্যাটি। অনেক সামাজিক ট্যাবু আছে যেগুলিকে অক্ষত রাখাটাই অনেক ক্ষেত্রে সভ্যতা এবং সামাজিক সহনশীলতা ও সমাজের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠার জন্য দরকারী। ট্যাবু শব্দটিকেই নেগেটিভলী নেবার কারণ নেই। অধিকাংশ ট্যাবুই গড়ে উঠেছে যৌনতাকন্দ্রিক সম্পর্ক এবং বিধিনিষেধকে কেন্দ্র করে। অবাধ যৌনতা সমাজ স্বীকৃতি দেয়নি দেখেই এইসব ট্যাবুর উৎপত্তি । যেমন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ইউরোপে "সমকামীতা" একটা সোশ্যাল, রিলিজিয়াস ও মোরাল ট্যাবুর আওতায় নিন্দনীয় হিসাবে দেখা হতো । যেটা এখনও বিশ্বের অনেক সমাজে দেখা হয়। একইভাবে "পেডোফিলিয়াও" বিশ্বের প্রায় সব সমাজেই সোশ্যাল, রিলিজিয়াস ও মোরাল ট্যাবুর আওতায় নিন্দনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য । এই ট্যাবু গড়ে উঠেছে মানুষের দীর্ঘ সময়ের বিবেচনাবোধ এবং সামাজিক বিবর্তনের ক্রমধারাবাহিকতায়। এখন আপনি যদি নারীর যৌনতাকেন্দ্রিক ট্যাবু সংস্কারের একই যুক্তিতে এই ট্যাবুকে যদি অক্ষত রাখতে না চান, তাহলে তা কিন্তু সামাজিক বিপর্যয়ই ডেকে আনবে। তাই শুধুমাত্র ট্যাবুকে আক্রমণ না করে সেই ট্যাবু সমাজ সভ্যতায় কি ভূমিকা রাখছে সেটা সর্বপ্রথমে বিবেচ্য হওয়া উচিত।

সর্বশেষে গালি বিষয়ে আরো দুএকটি কথা । সামহোয়্যার এর মত ব্লগ একটি সামাজিক কমিউনিটি, যেটা সমাজের একটা নির্দিষ্ট অংশকে প্রতিনিধিত্ব করেনা (যদিও বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় সিংহভাগ মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে প্রতিনিধিত্ব করেন) । এইরকম একটি সামাজিক কমিউনিটিতে নিজে কথা বলার সময় বার কারো উদ্দেশ্যে কথা বলার সময় অডিয়েন্স যেই ভাষায় স্বচ্ছন্দ সেই ভাষা ব্যবহারের দিকে খেয়াল করা উচিত। অডিয়েন্সের ভাষা ব্যবহার করেই তার কাছে কোন মেসেজ পৌছানো সবচাইতে সহজ। সে যেই ভাষায় পরিচিত নয়, তাকে উদ্দেশ্য করে আক্রমণের ক্ষেত্রে (তা যৌনতাকেন্দ্রিক হোক বা না হোক) সেই ভাষার ব্যবহার এক ধরণের অভদ্রতা। শব্দের ইনসেনসিটিভ এবং পরিপ্রেক্ষিত বিহীন ব্যবহার সাহসিকতা বা বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষতাকে নির্দেশ করেনা বরং ভীরুতা, নীচতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াপনা বা বোঝার অক্ষমতাকেই নির্দেশ করে। শুধুমাত্র নীচ এবং কাপুরুষরাই প্রেক্ষিত ছাড়া শব্দ ব্যবহার করে তাকে জায়েজ করার জন্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাষার সাথে তুলনা করে। এটা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে চূড়ান্তভাবে অপমান করা ছাড়া আর কিছু নয়।

একজন আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাষা ব্যবহারের উদ্দেশ্য এবং ব্লগে নানা জনকে উদ্দেশ্যে সেই সব ভাষার বিভিন্ন খন্ডাংশকে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যের পার্থক্য যদি বুঝতে না পারেন তাহলে আমার মন্তব্য অরণ্যে রোদন ছাড়া কিছুই হবেনা এবং সেক্ষেত্রে আপনার সময় নষ্ট করার জন্য দু:খিত ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:৪২
লেখক বলেছেন:
দেখুন,
আপনি মূল আলোচনায় যাবার আগে- out of context চারটি প্যারা আলোচনা করেছেন- আপনার ধর্মীয় পোস্ট বন্ধ করার দাবিতে দেয়া পোস্টে ( Click This Link) করা আমার মন্তব্য নিয়ে। out of context বললাম এ কারণে যে- আপনি যেসব বিশেষণে অভিহিত করার কথা বললেন- সেটির উদ্দেশ্য বুঝতে চাচ্ছিলাম এবং যেটা মনে হয়েছে- এ বিষয়ে তো আপনি আপনার পোস্টেই উত্তর দিতে পারতেন!! যাহোক- আপনি পোস্টে ধর্মান্ধ, out of context এসব শব্দ ব্যবহার যখন করেন তখন সমস্যা হয় না- আর আমি নিচের কেমন্ট করলেই আপনার আপত্তি তৈরি হয়......

"আপনার পোস্ট সম্পর্কে এটুকুই বলা যায়-

আপনি যে দাবি তুলেছেন- তা গলা চিপে ধরার মতই স্বৈরতান্ত্রিক।
বিপরীত মতকে রুদ্ধ করে নয়- পারলে যুক্তি খণ্ডানোই কাম্য।

আমার পোস্টসমূহে আপনাকে আমন্ত্রণ ও চ্যালেঞ্জ।" এ বলে আমার কিছু পোস্টের লিংক দিয়েছিলাম। এবং আমি এখনও মনে করি- বিপরীত মত যারা শুনতে পারে না- তাকে স্তব্ধ করে দিতে চায়- তারা অন্ধ ও স্বৈরাচারী।

আর, পিএইচডি-র বিষয়টি নিয়ে যখন কথা বললেন- তখন বলতেই হয়- ওপেন তর্ক-বিতর্কে বিশেষ পরিচয় জানিয়ে দিয়ে নিজের প্রতি ফেভার তৈরি করার সমস্যাটাই হলো- যখন আপনার অবস্থানকে স্পষ্ট করতে পারবেন না- বা নিজের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলবেন, তখন আপনার ঐ বিশেষ পরিচয়ের দিকেও তীর ছুটে যাওয়াটাই স্বাভাবিক!!!

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৮:৫৭
লেখক বলেছেন:
আসলেই মনে হলো- আমার সময় নষ্ট করেছেন!!!
আপনি কি আমার পোস্ট পুরো না পড়েই মন্তব্য করেছেন?? আমি এই পোস্টে খুব সচেতনভাবে দুধরণের ট্রেণ্ডকেই খণ্ডন করার চেস্টা করেছি- সেটি কি আপনার চোখের আড়ালে চলে গেল??
'মাগ' শব্দটি নিয়ে আমি নিজেই তো উদাহরণ দিয়েছি- আমি নিজেই তো বলেছি- এ সব শব্দসমূহকে যারা প্রান্তিকজনের ভাষা বলে যুক্তি দিয়ে অন্যকে গালি দেয়ার স্বার্থে ব্যবহার করে- তারা খণ্ডিত ভাবেই উপস্থাপন করে ও অপমান করে প্রান্তিকজনকে।

আমার কথাই আমার বিরুদ্ধে যুক্তি হিসাবে উপস্থাপন করা কতখানি সুবুদ্ধিজাত????

২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪০ রোকন বলেছেন: পিএইচডি মিরাজের বক্তব্য শেষ হল নাস্তিকের ধর্মকথার বুঝার ক্ষমতা নিয়ে একরাশ সংশয় প্রেকাশের মধ্য দিয়ে। তার নিজের বোঝার ক্ষমতা প্রায় ত্রিভুজ ভাইয়ের কাছাকাছি।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৫ অন্যমনস্ক শরৎ বলেছেন: খুবই ইন্টারেস্টিং পোষ্ট। যে কোন বির্তকের জন্য অসাধারণ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২২ শয়তান বলেছেন: +, প্রিয় পোস্ট
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:০৪ মৃদুল মাহবুব বলেছেন:
আপনি আমার পোষ্টে লিখেছেন

"মৃদুল,
আপনি যদি আপনার নিজস্ব কিছু বিচ্ছিন্ন চিন্তা-ভাবনা হিসাবে এই পোস্ট দিয়ে থাকেন- তবে আমার কিছু বলার নেই; তবে- যদি আমার পোস্টের উত্তরে এই পোস্ট দিয়ে থাকেন (যেমনটি আমার পোস্টে এই পোস্টের লিংক দিয়ে এখানে দেখতে বলেছেন)- তখন বলতেই হয়- আপনি আমার পোস্ট আবার পড়েন। আমি কি বলতে বলতে চেয়েছি- ইলিয়াসের সাহিত্যকর্ম কিভাবে উপস্থাপন করেছি- গালি প্রসঙ্গে আমার অবস্থান কি সেসব একটু ভালো করে পড়ে বুঝে তারপর উত্তর দেয়াটা সমীচীন।

আর, আমার আলোচনা খুবই স্পেসিফিক- আশা করবো স্পেসিফিক পয়েন্ট ধরেই আমার আলোচনার ভিত্তিতে আপনার মতামতটি জানাবেন।"

আমার কথা খুব পরিস্কার। আমিতো আপনার সাথে প্রায়ই একমত। আর যে কোন কিছুর আকারণ বিরোধীতা আমার ভালো লাগে না। আমার মনে হয়েছে আপনার লেখায় যেখানে যেখানে গ্যাপ থেকে গেছে (ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে যা মনে হয়েছে) আমি সে সমস্ত আমার মত করে পরিস্কার করার চেষ্টা করেছি। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না।

আর সবার ভাবনার স্তর সমান নয়, নয় তার প্রকাশ ভঙ্গি। এর মানে এই নয় যে কেউ আমার থেকে নিম্ন স্তরের। আমি সবার কাছ থেকেই কিছু নিতে চেষ্টা করি। আপনার কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। আপনার কাছে আমার লেখা বিছিন্ন মনে হতে পারে। এটা আমার তেমন কিছু নয়। আপনার স্তরে যেমন আমি নই তেমন আমি অবশ্যই আশা করি না আপনি আমার মত ভাববেন এবং কথা বলবেন। আর স্পেসিফিক কোন বিষয়ে কথা বলতে চান, জানালে ভালো হতো। কেননা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না কি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে নতুন করে। আমিতো আমার কথা বলেছি। আমার কথাকে বিরোধভাষা হিসাবে না নিলে খুশি হবো।

ধন্যবাদ। আশা রাখি আলোচনা চলবে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:১০ মিরাজ বলেছেন: দেখুন আপনি বললেন "ওপেন তর্ক-বিতর্কে বিশেষ পরিচয় জানিয়ে দিয়ে নিজের প্রতি ফেভার তৈরি করার সমস্যাটাই হলো- যখন আপনার অবস্থানকে স্পষ্ট করতে পারবেন না- বা নিজের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলবেন, তখন আপনার ঐ বিশেষ পরিচয়ের দিকেও তীর ছুটে যাওয়াটাই স্বাভাবিক"

আপনার এ কথাটি মানতে পারলামনা। আমার এই পর্যন্ত লেখা ১০৬টি ব্লগ পোষ্টে বা ২৪৬১ টি মন্তব্যে কোথাও একটিবারের জন্য আমার পরিচয় (এটা বিশেষ কোনো পরিচয় নয়, যা করছি তাই জানিয়েছি, যদি অন্য কোন কাজ করতাম তাও জানাতে দ্বিধা করতামনা) দিয়ে নিজের প্রতি ফেভার তৈরীর সপক্ষে একটি মাত্রও উদাহরণ দেখাতে পারেন তাহলে আপনার কথা মেনে নিবো।

আপনারা আমার পেশাগত পরিচয়কে অপ্রয়োজনীয়ভাবে আমাকে আক্রমণের জন্য যেভাবে ব্যবহার করছেন সেটাকে শোভনীয় বলতে পারছিনা।

যারাই নিজ নামে লিখছেন তারাই তাদের পরিচয় উল্লেখ করছেন তাদের প্রোফাইলে । আমিও তাই করেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দুএকজন শিক্ষকও করছেন । সমস্যা প্রোফাইলে আমাদের পরিচয় লেখাতে নয়, সমস্যা হলো আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গীতে ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:১২ স্নোবল বলেছেন: কি করতে এগুলা আপনে জানান যে আপনে কেলাসের ফার্স্ট বয়, ইত্যাদি ইত্যাদি?
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:২০ মিরাজ বলেছেন: @ স্নোবল
আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক লেখায় আমার ক্লাসে অবস্থান প্রাসংগিকভাবে উঠে আসলে সমস্যা কোথায়?

আর আমার ক্লাসে অবস্থান উল্লেখ করার আর একটি কারণ হলো মনিটর এর বিভিন্ন পোষ্টে আমাকে আক্রমণ করে এই কথাগুলি বলা --

"ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান স্যারের টেবিল মুছে, স্যারের বৌয়ের বাজার করে দিয়ে, স্যারের ছেলেকে পিঠে তুলে গরু-গাধা খেলে যারা টিচার হয়"

আমার প্রকৃত অবস্থান জানিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগতো থাকা উচিত? নাকি একটি প্রোপাগান্ডা আর মিথ্যাকে সত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেয়া উচিত?

কই আপনাদেরতো কোনদিন এইসব মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে দেখিনি!!!


২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:২৬ স্নোবল বলেছেন: আপনে যদি মনে করেন আপনার একাডেমিক পারফরমেন্সের বিবরন দিয়ে মনিটরের কমেন্ট কাউন্টার দিসেন, সেইটা আপনার ভুল ধারনা। এইটা কইরা আপনে আরো দশটা কমেন্ট দেওয়ার সুযোগ করে দিসেন।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:২৯ মিরাজ বলেছেন: @ স্নোবল
হয়তো আপনার কথাই ঠিক। তবে আসলে কারো সম্পর্কে না জেনে যারা এই ধরনের কমেন্ট করে তাদের আরো দশটা কমেন্টের সুযোগ দিতে হয়না, এরা এমনিতেই করবে ।

আমার কাছে মনে হয়েছে আমার একাডেমিক ফলাফল (যেটা টিচার হবার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল) উল্লেখ মনিটরের মন্তব্যের অসারতা তুলে ধরবে। আমার ভুলও হতে পারে, আপনার কথা ঠিক হতে পারে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৪০ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
মিরাজ,


তবে, একটি বিষয়- যেটি এই পোস্টে আলোচনা তেমন করিনি- সেটা হলো ট্যাবুকে আঘাত করা।

ইতিহাস আরো আগের, কিন্তু- ৫০/৬০ দশক থেকে দুনিয়া জুড়ে শিল্পে- সাহিত্যে- ফিল্মে শিল্পী-সাহিত্যিকরা একটি কাজ করে গিয়েছেন খুব সচেতনভাবে। বাংলা সাহিত্যে তো এ ধারা এনেছিল হাংরি জেনারেশন মুভমেন্টের কর্মীরা, পাশ্চাত্যে বিট জেনারেশন- ফিল্মে গদাররা- সেটির মূল উদ্দেশ্য ছিল দুটি- সাধারণ গণমানুষকে অবিকল তুলে ধরা তাদের শিল্প মাধ্যমে- এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে- মানুষের সংস্কারের মূলে বিশেষত ট্যাবুকে আঘাত করা। এটিকে বলা হচ্ছে- "প্লানড ভায়োলেন্স"। শিল্প-সাহিত্যের এ ধারার পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত থাকলেও এর কিন্তু একটি বড় অবদান- শিল্প-সাহিত্যকে সো-কলড ভদ্রতার মুখোশ থেকে বের হতে সাহায্য করেছে।

ইলিয়াসও সে ধারার বাইরের ব্যক্তি নন। তিনিও সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন নিরন্তর। তিনি বলেছেন, "আমি সেরকম সোসাইটি চাইছি যেখানে নারী পুরুষের সম্পর্কে কোনরকম বার থাকবে না।"

সেক্সের পেছনে যদি কোন ভ্যালু কাজ না করে তবে ব্যাপারটা অ্যানার্কি দাঁড়াবে কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "প্রথম কথা হচ্ছে অ্যানার্কি কি চেইনের চেয়ে ভালো না? আর দ্বিতীয় কথা হচ্ছে আমরা সংস্কারকেই মূল্যবোধ মনে করি। বিয়েটাকে একটা ভয়ালু হিসাবে বলা হচ্ছে কিন্তু এটাকে আমি সংস্কারও বলতে পারি। বিয়েটাকে কি সামন্ত কি বুর্জোয়া সবাই দারুন গ্লোরিফাই করেছে কিন্তু পুঁজিবাদী সমাজে বিয়েটা তো অন্তত কুতসিত একটা ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন একটা সোসাইটির স্বপ্ন দেখি সেখানে বিয়েটা কোন ইনস্টিটিউশন হবে না; একজন সভ্য নারী আর পুরুষের পরষ্পরের প্রতি যদি অনুমোদন থাকে, সেখানে তাদের মিলনে কোনো সংস্কার, অপরাধবোধ, পাপবোধ যেন বাঁধা হিসাবে না আসে,......"


আশা করি- আপনার ট্যাবু/ভ্যালু নিয়ে কথার একটা উত্তর পেয়ে যাবেন এর মাধ্যমে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:৪১ রোকন বলেছেন: মনিটরের কথা ঠিক। স্যারদের বাচ্চাকাচ্চা স্কুলে নিয়ে অনেকে ফার্ষ্টবয় হয়।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১:৪২ শয়তান বলেছেন: হুমম ।
২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৪:০৫ আইকোনাস ক্লাস্টাস বলেছেন: হলদে ডানা
আপনি বেশ অনেক কথা লিখলেন যৌনাঙ্গ নিয়ে কথা বা গালি গালাজ না করার ব্যপারে... কিন্তু, অন্য সব গালিগুলির কি হবে? সেগুলো তো যায়েজ, না কি? নাকি সেই মর্মে কোন কোরানের স্লোক আপনার জানা নেই?

কোরান ইতিহাসের বই না, একটা ধর্মগ্রন্থ। একে ধর্মগ্রন্থ হিসেবে না দেখে অন্য কোন কিছু হিসেবে দেখলে ধর্মীয় শিক্ষাটাই তো মিস হয়ে যাবে। আরেকটা কথা - মানুষ, বিশেষ করে আদম আর হাওয়ার কথা বলছিলাম, বেহেস্ত ছেড়ে এই গ্রহে আসার কারন কিন্তু পাপ - আল্লাহর কথা না শোনার ফল। এটা একটা শাস্তি যে তারা দুনিয়ায় এলো। সেই শাস্তির একটা হলো যেমন দুনিয়ায় আসা, আরেকটা হলো লজ্জা... বেহেস্তে ঐসব কিছুই ছিল না। এই সবের সাথে কষ্ট করে বেচে থাকার শাস্তি তো আছেই... অথএব - আমাদের সকল জরুরী জ্ঞান আর দিক নির্দেশনা নিয়েই আমরা এসেছি কথাটা মনে হয় ধর্মীয় দিক থেকেই ঠিক না।

এবার সবার জন্য:
গালিগালাজ ই হোক, বা জ্ঞান গর্ভ কোন সুশীল আলোচনাই হোক - ব্যান করে দেওয়ার ব্যপারটা কেমন যেন। পছন্দ হচ্ছে না - দেখেন না, পড়েন না, উত্তর দিয়েন না... অসুবিধা কি? দেখবেনও, পড়বেনও, আর উত্তরও দিবেন, আবার বলবেন এটা বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ, ইত্যাদি ইত্যাদি... সেটার মানে কি? কেউ যদি মনে করেন তারা বস্তিবাসীদের চাইতে উচু তাই তাদের ভাষাও তাদের মত হবে না, সেটা তাদের অভিরুচি... ইগো ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াতে কার না ভালো লাগে - যেমন বস্তিবাসীদের, তেমন ই প্রাসাদবাসীদের।

সাহিত্যের উদাহরন আমার দারূনই লাগলো... ধন্যবাদ না.ধর্ম কে। উদাহরন গুলা দিয়ে খুব সুন্দর করে আপনার পয়েন্টগুলা বুঝাতে পেরেছেন। আমার মনে হয় - মানুষের রুচী পরিবর্তনশীল। কাস্টমসও বদলায়। আগে করেছি গিয়েছি না বললে টিভিতে নাটক করা যেন না - সেটাই ছিল কথ্যভাষা। কিন্তু এখন করসি, গেসি তেই বেশ ভাল নাটক হচ্ছে - তাই না। এক সময় প্রাইম টাইমেও গালিগালাজ আসবে... অবশ্যই সেটা প্রাসঙ্গিক না হলে তো আর হবে না... সেতো সাধারন জ্ঞান - বলা মত কিছু না।

বেসিক কথা... ভাষা মনের ভাব প্রকাশের মাধ্যম। কিন্তু তা যদি মনের ভাব প্রকাশের অন্তরায় হয়ে যায় - তাহলে ধরে নেওয়াই উচিৎ যে কোথাও কোন একটা ঘাপলা আছে। কি বলেন?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৪ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
মিরাজ,

আপনি বলেছেন,-
"................সমাজ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পুরুষ নারীকে নির্যাতনের ক্ষেত্রে যৌনতাকে ব্যবহার করছে এবং সভ্যতার ক্রমবিকাশের হাত ধরে নারীকে এইসব হিংস্রতা থেকে রক্ষার জন্যই বিভিন্ন সামাজিক বা ধর্মীয় ট্যাবুর উদ্ভব হয়েছে । এরপর পুরুষ যখন সরাসরি শারীরিকভাবে নারীকে আক্রমণ করতে পারেনি তখন আশ্রয় নিয়েছে যৌনতাকেন্দ্রিক বিভিন্ন শব্দের যা নারীর জন্য অবমাননাকর, এরপর এইসব শব্দকে সমাজে উন্মুক্ত ব্যবহারের বিরুদ্ধেও ট্যাবু গড়ে উঠেছে।....."

এখানে আপনি সমাজ বিকাশের ইতিহাসকে কিন্তু ঠিক তুলতে পারেন নি। আপনি মর্গান পড়েন, আপনি রেবতী বর্মন পড়েন অথবা নৃতাত্তিক অন্যান্য বইও পড়লে দেখবেন- মানব সমাজের প্রথম থেকেই কিন্তু নারীর উপর পুরুষ এধরণের একতরফা নির্যাতন চালায়নি। বরং আপনি দেখবেন- পুরষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার গোড়াপত্তনের আগে মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাই এ দুনিয়াতে ছিল দীর্ঘকাল। নারীর উপর যখন পুরুষের কর্তৃত্ব স্থাপিত হলো- তখন থেকেই কিন্তু নারীর যৌন পবিত্রতা বা জন্মের বিশুদ্ধতা সংক্রান্ত মূল্যবোধ চালু করে নিতে হয়েছে সমাজব্যবস্থাকে।
আপনার মত হচ্ছে- নারীর প্রতি অবমূল্যায়নকারী বা ধর্ষকামী ঐ গালির বিরুদ্ধে ট্যাবু সৃষ্টি হয়েছে নারীকে এইসব হিংস্রতা থেকে রক্ষার জন্যই; আমি এইখানটাতেই আপনার সাথে দ্বিমত করছি। অনেকটা ডিম আগে না মুরগী আগের মত ডিলেমায় অনেকে পড়তে পারে- কিন্তু একটু চিন্তা করলেই প্রকৃত চিত্র পরিস্কার হওয়ার কথা।
আমি বলছি- এই মূল্যবোধ বা সংস্কার যখন মানুষের মাঝে প্রভাব বিস্তার করলো- তখনই কিন্তু এসব শব্দসমূহ বা বিষয় গালি হিসাবে স্থান পেলো। দেখুন- যে সময়টিতে মানুষের যৌনতা ছিল অবাধ ও স্বাভাবিক ঘটনা - সে সময়ে কি যৌনতা কোন গালি হতে পারে? এখনও যেসব জায়গায় বা যেসব ট্রাইবে মেয়েদের পলিগ্যামি একসেপটেড সেখানে কি কোন মেয়েকে চুতমারানী বা এ ধরণের কোন গালি থাকা সম্ভব? যেসময়ে বিয়ে নামের কোন ইনস্টিটিউশন ছিল না, সে সময়ে কি জারজ বা হারামির বাচ্চা বলে কোন গালি থাকা সম্ভব??
না-কি, যখন মানুষের মধ্যে সংস্কার বাসা বাধলো- মেয়েদের তাদের স্বামি ছাড়া কারো সাথে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া যাবে না- তখনই মেয়েদের ক্ষেত্রে ঐ গালি প্রযোজ্য হলো- নষ্টা, ভ্রষ্টা .. ইত্যাদি, যখন বংশ গরিমা- বা রক্তের বিশুদ্ধতা সংক্রান্ত মূল্যবোধ সমাজে চালু হলো- তখন্ই তো জারজ, বাস্টার্ড এসব গালি হলো???

সেকারণে বলছিলাম- গালিগালাজ তো কিছু শব্দের বিষয়, কিন্তু এসবের পেছনে সমাজের যে চিন্তাটা বিরাজ করছে- সেটিকে ধরা অধিক জরুরি। আপনি আজ পর্যন্ত - চুতমারানী- হারামী- নষ্টা-ভ্রষ্টা এসবের বিপরীতে একইরকম সেন্স বহন করে পুরুষকে গালি দিতে পারে এমন কোন শব্দ পাবেন না। কেন? এর পেছনে সমাজ মানসিকতাটা গুরুত্বপূর্ণ।

এসব গালি আপনি তুলে দিতে পারেন- কিন্তু তা কি সমাজকে পাল্টাবে?? একজন পুরুষকে তার বিবাহবহির্ভুত কোন যৌন সম্পর্ককে যে দৃষ্টিতে সমাজ দেখে একজন নারীর ক্ষেত্রে কি একই ভাবে দেখে? এই দৃষ্টিভঙ্গি কি গালির বিরুদ্ধে ট্যাবু তৈরি হলেই পাল্টে যাবে???

আশা করি বোঝাতে পারছি।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫০ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
মিরাজ,
আপনি বলেছেন,-
"......আসলে এখানেই মুল সমস্যাটি। অনেক সামাজিক ট্যাবু আছে যেগুলিকে অক্ষত রাখাটাই অনেক ক্ষেত্রে সভ্যতা এবং সামাজিক সহনশীলতা ও সমাজের সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠার জন্য দরকারী। ট্যাবু শব্দটিকেই নেগেটিভলী নেবার কারণ নেই। অধিকাংশ ট্যাবুই গড়ে উঠেছে যৌনতাকন্দ্রিক সম্পর্ক এবং বিধিনিষেধকে কেন্দ্র করে। অবাধ যৌনতা সমাজ স্বীকৃতি দেয়নি দেখেই এইসব ট্যাবুর উৎপত্তি। ......"

".......এই ট্যাবু গড়ে উঠেছে মানুষের দীর্ঘ সময়ের বিবেচনাবোধ এবং সামাজিক বিবর্তনের ক্রমধারাবাহিকতায়। এখন আপনি যদি নারীর যৌনতাকেন্দ্রিক ট্যাবু সংস্কারের একই যুক্তিতে এই ট্যাবুকে যদি অক্ষত রাখতে না চান, তাহলে তা কিন্তু সামাজিক বিপর্যয়ই ডেকে আনবে। তাই শুধুমাত্র ট্যাবুকে আক্রমণ না করে সেই ট্যাবু সমাজ সভ্যতায় কি ভূমিকা রাখছে সেটা সর্বপ্রথমে বিবেচ্য হওয়া
উচিত। ......." ইত্যাদি।
------------------------------>
ট্যাবু বা সংস্কারকে আমি নেগেটিভলি দেখি। যদিও মূল্যবোধকে সবসময় নেগেটিভলি দেখাকে নির্বুদ্ধিতাই মনে হয়। এটা মনে করি- মূল্যবোধ অর্জিত হয়- মানুষের দীর্ঘ সময়ের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়। ফলে- মূল্যবোধ যা মানব সমাজেরই একেকটি অর্জন তাকে ফু দিয়ে উড়িয়ে দেয়ার প্রয়োজন মনে করি না- কিন্তু সেই মূল্যবোধই যখন একসময় মানুষের মধ্যে অন্ধভাবে বাসা বাধে- মানুষের চিন্তা শক্তিকে ঢিলে করে দেয় এবং সমাজবিকাশের নিয়মকেই অস্বীকার করায়- তখন তাকে বলা হয় ট্যাবু বা সংস্কার। এটার মধ্যে কোন পজিটিভিটি খঁজে পাইনা।

সমাজ বিকাশের নিয়মটি এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই নিয়মটি হচ্ছে- কোন মূল্যবোধই চিরস্থায়ী নয়। সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথেই এটা পরিবর্তনশীল। এককালে যে মূল্যবোধ ছিল প্রচণ্ড প্রগতিশীল- এক পর্যায়ে তা-ই হতে পারে প্রতিক্রিয়াশীল। মূল্যবোধ যখন সংস্কার বা ট্যাবু হয়ে দাঁড়ায়- তখন সমাজ বিকাশের এই নিয়ম মনে থাকে না- পুরানো সেই মূল্যবোধ যতই প্রতিক্রিয়াশীল হোক- তা কে সহজভাবে গ্রহণ করতে হাজারো বাঁধা তৈরি হয়ে যায়। সেখানেই সমস্যা।

আমি একবারো বলিনি- সমস্ত মূল্যবোধই এ মুহুর্তে ত্যাগ করতে হবে। যা বলেছি- আজ আমাদের মাঝে যেসব ট্যাবু বা সংস্কার হিসাবে বাসা বেঁধেছে- যেহুলোর কারণে আমরা আমাদের চিন্তাশক্তিকে গণ্ডিবদ্ধ করে ফেলেছি- সেই ট্যাবু থেকে আমাদের চিন্তা-চেতনাকে মুক্ত করা প্রয়োজন।

আশা করি বোঝাতে পেরেছি। সারওয়ার চৌধুরির জবাবে লেখা কমেন্ট গুলো পড়লে আরো পরিস্কার হতে পারে।
২৫ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:১৮ নাস্তিকের ধর্মকথা বলেছেন:
মিরাজের নিচের লিংকে দেয়া মজার পোস্টে বেশ কিছু আলোচনা হয়েছে। সেটি পড়ার আহ্বান থাকলোঃ
Click This Link
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১০:৫৩ ফাহমিদুল হক বলেছেন: "এবার আসি- গালি দেয়ার প্রথম কারণটি নিয়ে। আমার মনে হয়- এ কারণটিতে যারা গালি-বর্ষণ করে, তারা নির্বোধ প্রকৃতির, এবং তারা গলার জোরেই নিজ মতকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় বলেই নির্বোধ। এ ধরণের গালিকেই আমি অপছন্দ করি সবচেয়ে বেশি, সেটির ভাষা যেমনই হোক- তা সে চ-বর্গীয় শব্দযোগের গালি হোক আর- অতি ভদ্র গোছের সুশীলিয় গালিই হোক "

নাস্তিকের ধর্মকথা, গালি প্রসঙ্গে আমার অবস্থান মিরাজের চাইতে আপনার কাছাকাছি। কিন্তু "এনাদের মত লোকেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ধারী শিক্ষক!!!!!!!!!!!!!" মন্তব্যটি সুবিবেচনাপ্রসূত মনে হয়নি। মিরাজের অবস্থান, অনেক মানুষের অবস্থান। এটাকে আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না।
২৮ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১১:২০ শমশের আলম শোভন বলেছেন: নাস্তিক ভাই, আপনের লেকা আগে খিয়াল করি নাই৷ মন থাইকা কইতাছি এই মানের লিকা বল্গে খুব কম পড়ছি৷ ধন্যবাদ ধন্যবাদ৷ আপ্নের মত মেধা দর্কার আমগো এই গরিব দেশে৷ যেই সুশিলগো কথা কইলেন অগো দিয়া কাম হইবো না, পাচশ বই ুদলেও ওগো কলম দিয়া এরম লেকা আইবো না